Saturday, November 16, 2019

শিশুকে প্লে-জোন এ খেলতে দেওয়ায় সতর্ক হোন!


সেদিন শুক্রবার। আমাদের একটা দাওয়াত ছিলো, ধানমন্ডি আট নাম্বার Xinxian এ, ওখানের Play zone এ আমার ছেলে খেলেছে। জীবনে প্রথম আমার ছেলে কোনো ইনডোর প্লে জোন এ খেললো। ওখানে অনেক ছোট ছোট Soft ball আছে, সেখানে গড়াগড়ি করে খেলাধুলা করলো। অনেক মজা করেছে ও। রাতে খেয়ে, হাত মুখ গা ভালো মতো Sponge করে ঘুম দিলো, শনিবার সকাল থেকেই কান লাল, কেমন কেমন করে, বলে খারাপ লাগে, রাত এ গায়ে পিঁপড়ার কামরের মতো হয়ে গেলো, সারা রাত গা চুলকালো। সারারাত, এক ফোঁটাও ঘুম নাই, রবিবার সকাল থেকেই লাল ভাব ও Itching বাড়তে বাড়তে এক সময় মনে হলো Breathing problem হচ্ছে, মুখ দিয়ে লালা পরছে। সে বাচ্চার অবস্থা খারাপ হতে হতে রাত ১১ টায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো। ডাক্তার বললেন Indoor Fungal Dust Allergy. আমার বাবু ৬দিন হলো স্কয়ার হাসপাতালে এ ভর্তি। অনেক সাফার করেছে যা আমি বলে বোঝাতে পারবো না। সারাদিন নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকতো, যেটুকু সময় জেগে থাকতো চুলকাতে চুলকাতে অস্থির।
কাল রিলিজ দিবে কিন্তু ডাক্তার বলেছেন পুরোপুরি সারতে সপ্তাহ খানেক লাগে। গায়ে লাল লাল ভাব, Itching, দুর্বলতা থাকবে সপ্তাহখানেক। কী ভয়ানক জীবাণু ভাবতে পারেন?
So, be careful before taking your precious kids to any Play zone. অনেক Play zone ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করেনা। আর এই বলওয়ালা Play zone গুলা মনে হয় বেশি অস্বাস্থ্যকর। আগে Play zone ওয়ালা রেস্টুরেন্ট খুঁজতাম বেবি কে নিয়ে যাওয়ার জন্য, এখন মাফ চাই। আপনারাও সাবধান হোন; এমন ফালতু নোংরা সব জীবাণুর বাসাওয়ালা Play zone থেকে। বাচ্চারা বমি করতে পারে, শিশ করতে পারে, খাবার ফেলতে পারে যাতে তেলাপোকা, পিঁপড়া, ইঁদুর, টিকটিকি এইসবের জীবাণু থাকতে পারে। অনেকের বাবুর হয়ত সমস্যা হয়না, কিন্তু অনেকেরই হয়। কখন কীসে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ে বলা জায়না।
বাবু এখন বাসায় আছে, ভালো আছে আলহামদুলিল্লাহ্। কিন্তু খুবই দুর্বল। কারণ সে ৪/৫ দিন কিছুই খায়নি। স্যালাইন চলছিলো বলে রক্ষা।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Friday, May 10, 2019

গর্ভাবস্থায় যে কাজগুলো করলে প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্ম হতে পারে!

গর্ভকালীন  পরামর্শ


কেউই চায়না যে তার সন্তান প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মাক। বিশেষ করে মায়েরা তো কখনই চায়না। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো মায়েদের কিছুকিছু ভুলের জন্য কিন্তু প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্ম হতে পারে। অবাক হলেও সত্যি। তার এই বিপদের হাত থেকে বাঁচতে আজ থেকে খেয়াল রাখা শুরু করুন যাতে এই ভুলগুলি কোনোমতেই না হয়।

১. গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেননা। এতে সন্তানের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সৃষ্টিতে বসার সৃষ্টি হতে পারে।

২. গর্ভাবস্থায় নিচু হয়ে ঝুঁকে কোনো কাজ করবেন না।

৩. মায়ের বয়স যদি খুবই কম ( ১৮ এর কম ) বা খুবই বেশি ( ৪০ এর কাছাকাছি ) হয় তাহলে প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর পরিমানে বেড়ে যায়।

৪. নিকট আত্মীয়দের মধ্যে অর্থাৎ রক্তের সম্পর্কের মধ্যে বিয়ে হলে প্রতিবন্ধকতার সম্ভাবনা থাকে।

৫. মায়ের দেহে কোনোরকমের তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রবেশ ঘটলে প্রতিবন্ধী সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা অনেকগুন বেড়ে যায়।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Saturday, February 9, 2019

বাচ্চা ডেলিভারির জন্য হসপিটালে যাবার সময় এই ১৫টি জিনিস সাথে রাখুন!


সন্তান প্রসবের জন্য আপনাকে কিছুদিন হাসপাতালে থাকতেই হবে। তাই হাসপাতালে যাওয়ার পূর্বে কিছু প্রস্তুতি নেয়া উচিত । তা না হলে দেখা যাবে আপনার স্বামীকে বারবার হাসপাতাল আর বাসায় দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। এটি যদি হয় আপনার প্রথম সন্তান তাহলে আপনি অনেক কিছু সম্পর্কে অবগত নাও থাকতে পারেন। হাসপাতালে যাওয়ার পূর্বে আপনার এমন কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী আপনার সঙ্গে থাকা উচিত যা হাসপাতালে অবস্থানের সময়টা আপনার সুন্দর কাটবে। সুতরাং জেনে নিন এমন কিছু বিষয় যা না জানলেই নয়।

(১) প্রেসক্রিপশন:
ব্যাগে অবশ্যই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, বিভিন্ন টেস্ট রিপোর্ট, প্রয়োজনীয় ঔষধ যথাস্থানে গুছিয়ে রাখুন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় এবং আপনার যথাযথ ডায়াগনোসিসের জন্য এসব প্রেসক্রিপশন, রিপোর্ট অবশ্যই প্রয়োজন হবে। রিপোর্ট, প্রেসক্রিপশনের জন্য একটি ফাইল মেইনটেইন করুন যা সহজেই খুঁজে পাবেন।

(২) বিছানার চাদর, বালিশ, কাঁথা বা পাতলা কম্বল:
শারীরিক সুস্থতার পূর্বশর্ত হল মানসিক সুস্থতা। অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা যায় যে নিজের বিছানা, বালিশ, চাদর, কম্বল ছাড়া নিদ্রা দেবীর দেখা মেলাই ভার হয়ে দাঁড়ায়। আর হাসপাতালের বিছানার কথা ভাবলেই গা গুলিয়ে উঠে। কিন্তু নিরুপায় ও জটিল অবস্থার শরণাপন্ন? নার্সিং হোম এ তো যেতেই হবে। কোনো ভাবাভাবি ছাড়া চটজলদি নিজের প্রয়োজনীয় দু’খানা বিছানার চাদর, পাতলা কাঁথা, যদি সময়টা হয়ে থাকে শীতকাল তবে পাতলা কম্বল আর সুযোগ থাকলে নিজের অতি প্রিয় নিত্যসঙ্গী বালিশ খানাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে। আর যাই হোক, মাতৃত্বের মত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজের মনকে কিছুটা মুহূর্তের জন্য হলেও রিলাক্স রাখার চেষ্টা বইকি।

(৩) শিশুর জন্য কাপড়:
আমরা অনেকেই আসন্ন ডেলিভারির চিন্তায় এতই টেনশনে থাকি যে নবজাতকের সুরক্ষার কথা একেবারেই ভুলে যাওয়ার যোগাড় হয়। নবজাতকের আগমন পরবর্তী মুহূর্তগুলো যাতে সুরক্ষিত ও নিরাপদ হয় সে কথা মাথায় রেখে কিছু হাল্কা সুতি কাপড়ের কাঁথা, ন্যাপকিন, আরামদায়ক ডায়াপার, নরম বেবি তোয়ালে ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস হাতের কাছেই রাখুন ।

(৪) জামাকাপড়:
বেশ কয়েকদিনের হিসাব করে পরিস্কার জামাকাপড় নিয়ে নিন। গর্ভবতী মায়েদের জন্য সুতির হালকা আরামদায়ক জামাকাপড় সঙ্গে রাখা উচিত। যদি শীতকাল হয়ে থাকে তাহলে গরম জামাকাপড় ব্যাগে রাখতে ভুলবেন না।

(৫) নরম তোয়ালে:
আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মধ্যে তোয়ালে অবশ্যই নিতে ভুলবেন না। এসময় নরম তোয়ালে ব্যবহার করাই উত্তম। তাছাড়া, প্রসবের পর আপনার সন্তানকে পরিস্কার নরম তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে রাখার জন্য কমপক্ষে দুটি তোয়ালে ব্যাগে রাখবেন।

(৬) স্লিপার ও মোজা:
নরমাল হাঁটাচলার জন্য এবং ওয়াশরুম এ ব্যবহারের জন্য আলাদাভাবে দু’ জোড়া স্যান্ডেল অবশ্যই সাথে রাখুন। তবে খেয়াল রাখবেন স্যান্ডেল গুলো যাতে স্লিপারি না হয়। হাঁটাচলায় সাবধান থাকুন। আর সময়টা যদি হয় শীতকাল তবে সাথে মোজা রাখতে অবশ্যই ভুল করবেন না।

(৭) মোবাইল ফোন, চার্জার, এবং রিচার্জ কার্ড:
ব্যাগ গোছানোর শুরুতেই আপনার মোবাইল ফোনটি সাথে নিন। চার্জারটি ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা দেখে নিন এবং ব্যাগে যথাস্থানে রাখুন যাতে খুব সহজেই খুঁজে পান। কারণ, প্রয়োজনের সময় এই মোবাইল ফোনটিই হয়ে উঠবে আপনার পরম বন্ধু। মোবাইলের বেশি করে টাকা রিচার্জ করে নিন। দরকার হলে কয়েকটি রিচার্জ কার্ড ব্যাগে রাখুন।

(৮) টয়লেট্রিজ:
বিভিন্ন ধরনের টয়লেট্রিজ সামগ্রী যেমন: টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, হেয়ারড্রায়ার, ডিওডরেন্ট, শ্যাম্পু, সাবান, হ্যান্ডওয়াশ, বডিওয়াশ, টয়লেট টিস্যু, ফেসওয়াশ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস একটি ছোট ব্যাগেগুছিয়ে আপনার মূল ব্যাগে রাখুন। এসব সামগ্রী সঙ্গে থাকলে হাসপাতালের পরিবেশে আপনি কমফোর্টফিল করবেন।
এছাড়া হাল্কা প্রসাধনী যেমন চিরুনি, আয়না, হেয়ার ব্যান্ড, ময়শ্চারাইজার লোশান ইত্যাদি একটি ছোট পার্সে এ গুছিয়ে নিতে পারেন। নিজেকে একটু টিপটপ দেখাতে কে না ভালবাসে, বলুন তো?

(৯) ইলেকট্রিক কেটলী ও পানির বোতল:
আপনার প্রসবের সময়টা যদি শীতকাল হয়, তাহলে আপনার যখন তখন গরম পানির প্রয়োজন হতেপারে। এজন্য পানি গরমের জন্য ইলেকট্রিক কেটলী থাকলে তা খুবই উপকারে দেবে। এছাড়া পানি খাওয়ার জন্য পানির জগ বা বিশুদ্ধ কয়েকটি খাবার পানির বোতল অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।

(১০) কাগজ ও কলম:
কথায় আছে, প্রয়োজনের সময় খড়- কুটোটিও পাওয়া যায় না। কোন প্রয়োজনীয় কিছু লিখতে হতেও পারে অথবা যাদের লেখালেখির অভ্যাস আছে তাঁরা তাঁদের এইরকম একটা বিশেষ মুহূর্তে মনের অনেক না বলা অনুভূতির কথা ডায়েরি বা নোটবুক এ লিখে রাখার তাগিদে কাগজ, কলম, ডায়েরি বা নোটবুক নিতে ভুলে যাবেন না যেন।

(১১) শুকনো খাবার:
প্রসবকালীন সময়টা অনেক সময় মুখ শুকিয়ে যায়। এজন্য সবসময় সুগার ফ্রি লজেন্স মুখে রাখা ভাল। আর তাই এক প্যাকেট সুগার ফ্রি লজেন্স, ঔষধ খাওয়ার সময় হালকা কিছু খাওয়ার জন্য কিছু শুকনো খাবার ব্যাগে অবশ্যই রাখবেন।

(১২) ফোন বুক:
উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এসে আমরা অনেকেই ফোন বুক এর প্রয়োজনীয়তার কথা মনেই রাখিনা। কিন্তু কখনও ভেবেছেন কি, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এমনটি হতেই পারে যে আপনার মোবাইল এর চার্জ শেষ, ফোন সুইসড অফ, অথচ আপনার এমন একজনকে ফোন করা দরকার যার নাম্বারটি আপনার মোবাইল এই সেভ করা ছিল। সেই মুহূর্তেই আমরা উপলব্ধি করতে পারি ফোন বুক এর উপকারিতা। সুতরাং সাথে ফোন বুক টি রাখতে ভুল করেও ভুলে যাবেন না যেন।

(১৩) সময় কাটানোর জন্য বই/ম্যাগাজিন:
মানসিক অবসাদ কাটাতে বই বা ম্যাগাজিন পড়ার অভ্যাস অনেকেরই দেখা যায়। মনকে প্রশান্তি দেয় এমন বই বা ম্যাগাজিন সাথে রাখলে আপনার প্রিয় সঙ্গীর মতই সঙ্গ দেবে সেই বই বা ম্যাগাজিন।

(১৪)ডায়াপার এবং স্যানিটারি ন্যাপকিনঃ
প্রসবের পর কিছু সময় পিরিয়ডের মতোই রক্ত যেতে পারে (তবে এটি পিরিয়ড না)। তাই ভাল মানের স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে নিন। আর নবজাতকের ত্বক পরিচ্ছন্ন ও আর্দ্রতামুক্ত রাখার জন্য বেবি ওয়াইপস এবং উচ্চ শোষণক্ষমতা যুক্ত ডায়াপার নিয়ে নিন।

(১৫) অতিরিক্ত অর্থ :
শুধু ডেলিভারি বলেই নয়, যেকোনো প্রয়োজনীয় মুহূর্তে অতিরিক্ত কিছু টাকা সাথে রাখুন। যদি নিজের কাছে রাখার মত পরিস্থিতি না থাকে তবে বিশ্বস্ত কারো কাছে দিয়ে রাখবেন যেন দরকারে চেয়ে নিতে পারেন।

এ কথা জানেন তো? যে কোনো কাজের পূর্ব প্রস্তুতিই কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে। ডেলিভারির জন্য যেহেতু মাতৃসদনই আপনার গন্তব্যস্থল তাই যথাযথ পূর্বপ্রস্তুতি ঐ সময়টায় আপনাকে রিলাক্সে থাকতে অনেক সাহায্য করবে। যদি ঐ সময় আপনার হাতের কাছে সব গুছানো না পান তবে কি আপনার মনের দিক থেকে আদৌ স্বাভাবিক থাকা সম্ভব? ধরুন, প্রয়োজনের আপনার মোবাইল ফোনের চার্জারটা নিতে ভুলে গেলেন বা আপনার এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যা নিতেই আপনার মনেই নেই, তখন ভাবুন তো আপনার মনের অবস্থা কি হবে? তাই হাসপাতালে যাওয়ার আগে এই লিস্ট দেখে আপনি সহজেই আপনার ব্যাগটি গুছিয়ে নিতে পারেন। আপনার সুস্থ, সুন্দর, স্বাভাবিক মাতৃত্বই সুন্দর ভবিষ্যতের প্রতীক। অনাগত শিশুর সুন্দর পরিপূর্ণতা নির্ভর করে মূলত একটি সুন্দর, গোছানো আগমনী প্রস্তুতির উপর।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Thursday, February 7, 2019

জেনে নিন, গর্ভবতীর নরমাল ডেলিভারির জন্য করণীয় কী?


গর্ভধারণের পর থেকেই উত্তেজনার পাশাপাশি চিন্তা ও ভয় চলে আসে। দিন যতই এগিয়ে আসে যন্ত্রণার ভয়, অজানা আতঙ্ক ততই বাড়তে থাকে। এ কারণে অনেকে অপারেশন বা সিজারিয়ানের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। নরমাল ডেলিভারির পর্যায়গুলো জানা থাকলে প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।

জেনে নিন নরমাল ডেলিভারির পর্যায়গুলো।

১ম ধাপ- গর্ভপাতের লক্ষণ→
গর্ভযন্ত্রণার প্রথম ধাপকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রাথমিক পর্যায় সার্ভিক্স ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে শুরু করে। খুব বেশি যন্ত্রণা না হলেও পিরিয়ডের সময় যে রকম খিঁচ ধরে পেটের পেশীতে সেরকম যন্ত্রণা অনুভূত হয়। কোমরের নিচের দিকে, তলপেটে ৩০-৬০ সেকেন্ড এই ব্যথা স্থায়ী হয়। ৫-২০ মিনিটের মধ্যে ব্যথা ফিরে ফিরে আসে। সকলের ক্ষেত্রে এই সময় এক থাকে না।

দ্বিতীয় পর্যায়ে একে বলা হয়ে থাকে সক্রিয় গর্ভযন্ত্রণা। এই সময় সার্ভিক্স প্রায় ১.৬ থেকে ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত প্রসারিত হয়। কোমরের দিক থেকে পেটের দিকে আসতে থাকে ব্যথা। ৩-৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এই ব্যথা স্থায়ী হয়। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, এই সময় গরম জলে স্নান করলে আরাম পাবেন।

তৃতীয় পর্যায়ে সার্ভিক্স ৩-৪ ইঞ্চি প্রসারিত হয়। যন্ত্রণা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বমি পেতে থাকে, ঘাম হয়, কাঁপুনি দিতে থাকে। তৃতীয় পর্যায় খুব কম সময়ের হলেও সবচেয়ে কঠিন। ১৫ মিনিট থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ডাক্তার না বলা পর্যন্ত এই সময় ‘পুশ’ করা উচিত নয় বলে জানান চিকিৎসকরা।

দ্বিতীয় ধাপ- পুশ→
দ্বিতীয় ধাপেই শিশুর জন্ম হয়। ডাক্তাররা এই সময় পুশ করতে বলেন। পুশ করার সঙ্গে সঙ্গেই রিল্যাক্স থাকতে হবে। এক সঙ্গে পুশ ও রিল্যাক্স করা কঠিন হলেও তা সম্ভব। ডাক্তার যেভাবে বলছেন, সেভাবেই পুশ করুন। প্রথমে শিশুর মাথা বেরিয়ে আসে। সেই সময় একটু জ্বালা করলেও ধীরে ধীরে কমে আসে।

তৃতীয় ধাপ- প্লাসেন্টা→
তৃতীয় ধাপে প্লাসেন্টা শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসে। প্লাসেন্টা বেরোনো পর্যন্ত জরায়ুর সংকোচন হবে। ডাক্তার, নার্সরা এই সময় পেটে হালকা মাসাজ করতে থাকেন। এই পর্যায় কিছু অস্বস্তিকর। প্লাসেন্টা বেরিয়ে আসার পর তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। এই সময় যোনিতে অসম্ভব ব্যথা অনুভূত হয়।

চতুর্থ ধাপ- সমাপ্তিকাল→
ডেলিভারি শেষ। জরায়ুর কিছু কাজ বাকি থেকে যায় এই সময়। জরায়ু আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসার কারণে সংকোচন অনুভূত হয়। কিন্তু এই সময় ব্যথা হয় না। নরমাল ডেলিভারির পর শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে দু’দিন সময় লাগে। এই সময় হাসপাতালে থাকতে বলেন চিকিৎসকরা।

প্রচুর পরিমাণ পানি খেয়ে শরীর হাইড্রেটেড রেখে মলত্যাগ স্বাভাবিক হলে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

হাসপাতালে নবজাতক চুরি করা চক্র হতে সাবধান!


এ বিষয়ে নিজে সচেতন হোন; অন্যকেও সচেতন করুন। জেনে নিন এই চক্র কী কী কৌশল প্রয়োগ করে কাজ করে-

যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে আবারও এক দিন বয়সের এক নবজাতক চুরি হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ড থেকে কৌশলে এক নারী ওই নবজাতক চুরি করে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সন্দেহজনক এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে সন্তানকে হারিয়ে মা রুপালী খাতুন এখন দিশেহারা, গতকাল শনিবার তিনি এই ছেলেসন্তানের জন্ম দেন।

এর আগে এখানে গত বছরের ১৯ নভেম্বর নয় দিন বয়সের এক নবজাতক হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ড থেকে চুরি হয়েছিল। এবার এক দিনের ছেলে নবজাতক চুরি হয়েছে।

যেভাবে চুরি হয়েছিল-
রুপালী খাতুন বলেন, ‘বোরকা পরা অপরিচিত এক নারী সকাল থেকে ওয়ার্ডে ঘোরাঘুরি করছিল। ওই নারী বারবার আমার ছেলেকে কোলে নিতে চাইছিল। আমি দিতে রাজি হইনি। সে বারবার বলেছিল, ‘আমার ছেলেমেয়ে হয় না। তোমার ছেলেটাকে কোলে নিয়ে একটু শান্তি পেতে দাও।’ তারপরও আমি ছেলেকে তার কোলে দিইনি। কিন্তু আমার শাশুড়ি বুঝতে পারেননি। কিছুক্ষণ পরে ওই নারী কৌশলে আমার শাশুড়ির কাছ থেকে ছেলেকে কোলে নিয়ে পালিয়ে গেছেন।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শনিবার রুপালী খাতুন নামে ওই প্রসূতি মায়ের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি ছেলে নবজাতক হয়। এক দিন পরেই অপরিচিত এক নারী ওয়ার্ডে গিয়ে তাদের সাথে সম্পর্ক করে নবজাতকটি চুরি করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই চোরকে শনাক্ত করার সুযোগ রয়েছে। থানার ওসিকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা বলেন, ‘রোগীর স্বজনের কাছ থেকে কৌশলে এক নারী একটি নবজাতক চুরি করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

এক বছর আগে চিকিৎসা সহায়তার জন্য ছবি তোলার কথা বলে হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে নয় দিন বয়সের এক নবজাতককে এক নারী চুরি করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায়ও কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়। চুরির মাস খানেক পরে কেশবপুর উপজেলা থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে পুলিশ।

নবজাতক চুরি ঠেকাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কী পদক্ষেপ রয়েছে— জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের পর প্রসূতি মা ও নবজাতককে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি থাকে। রোগী ও স্বজনদের বারবার সতর্ক করা হয় তারা যেন অপরিচিত কারও কোলে নবজাতক না দেন। স্বজনদের দায়িত্ব নবজাতক আগলে রাখা। তারপরও হাসপাতালের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার জন্য বেসরকারি সিকিউরিটি ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, সেটি ভেবে দেখা হচ্ছে।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকে হাসপাতালের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে। যে কারণে দর্শনার্থী ঠেকানো খুব কঠিন হয়ে যায়। ঠেকাতে গেলেই রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কর্মচারীদের প্রায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

প্রসূতি মায়েদের যে ওয়ার্ডে রাখা হয়, সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত শয্যার বাইরে মেঝেতে (ফ্লোর) অতিরিক্ত বিছানা ফেলে প্রসূতি মায়েদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা হয়েছে। একই বিছানায় বসে রোগী ও স্বজনেরা ভাত খাচ্ছেন। পান-তামাক খাচ্ছেন স্বজনদের কেউ কেউ।

তথ্যসূত্র: দৈনিক 'প্রথম আলো' | ০৯ জুলাই ২০১৭, ১৬:৩০

ভালো থাকুন | School of Awareness

Wednesday, February 6, 2019

ফিডার গরম পানিতে পরিষ্কার করলেন তো ডায়রিয়াকে বাবুর কাছে ডাকলেন!


ভাবী কল করেছিলেন। জানিস তোর ভাতিজার আবার ডায়রিয়া হয়েছে, খুব খারাপ অবস্থা। বাবুর বয়স এগারো মাস। শুনে খারাপ লাগছিল। বার বার ডায়রিয়া হলে ওয়াটার সলুবল ভিটামিন (পানিতে দ্রবীভূত ভিটামিন যেমন- ভিটামিন বি ভিটামিন সি) এর ঘাটতি দেখা যায়। যা বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক গঠনে খুব খারাপ ইফেক্ট ফেলে। ভাবীকে বলার সাহস পাচ্ছিলাম না যে বাবুর খাবার ঢেকে রাখেন কিনা? কারণ ভাবী যে খুবই পরিচ্ছন্ন আর গোছালো সেটা বাড়ির সবাই জানে। নিজেই বলল বাবুর খাবার দাবারের ব্যাপারে এত সচেতন থাকি তবুও এসব হচ্ছে কেন বলেই স্বভাবসিদ্ধ কাঁদতে শুরু করল।

আরে কান্নার কি আছে? আচ্ছা বাচ্চা কি ফিডার ইউজ করে?
হ্যাঁ। কিন্তু আমি তো ফিডার শেষ হওয়ার পর প্রায় আধাঘণ্টা গরম পানিতে ফুটাই। হেসে ফেললাম। বললাম ভাবী ভাতিজার সমস্যা তো ধরে ফেলেছি।
ভাবী তো অবাক।
বললাম আচ্ছা কাঁচা ডিম ভেংগে দেখেছেন কী নরম?
হ্যাঁ।
চুলায় গরম পানিতে সিদ্ধ করলে কেমন হয়?
কেন অনেক শক্ত?
এখানেই আপনার ঝামেলা। দুধেও প্রোটিন থাকে। আপনি বাচ্চাকে ফিডার খাওয়ানোর পর ফিডারের গায়ে কিছু দুধ তো লেগে থাকেই সেটা দেখা যাক বা না যাক। এই অবস্থায় আপনি যখন সেই ফিডারকে গরম পানিতে দিচ্ছেন তখন দুধের প্রোটিংগুলো বোতলের গায়ে শক্তভাবে লেগে যাচ্ছে। আর এগুলো অনেক দিন ধরে বোতলের গায়ে থাকে ফলে জীবানু খুব সহজেই আক্রমন করে এদের। আবার ঐ বোতলেই দুধ দিচ্ছেন আর ভাতিজা দুধের সাথে জীবানু খেয়ে সব বের করে দিচ্ছে।

আমার লেকচারে ভাবির কান্না কোথায় হারিয়ে গেছে বলল তাহলে কি করব?
বললাম কেন ঠান্ডা পানি আছে না? ঠান্ডা পানিতে তো আর প্রোটিন জমে না ।
প্রথম দুই বছরে বাচ্চাদের ডায়রিয়া হওয়া খুব ক্ষতিকর। আর অনেক পরিচ্ছন্ন মায়েরাই এই ছোট্ট ভুলের জন্য নিজেরাতো কষ্টে ভোগেনই বাচ্চার ও ভবিষ্যত গ্রোথকে স্লো করে দেন।
তাই বাচ্চার ফিডার আগে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে বা প্রয়োজনে ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে তারপর গরম পানিতে ফুটিয়ে জীবানুমুক্ত করুন। প্রথমেই গরম পানিতে ধুয়ে জীবানুযুক্ত করে সর্ষেতে ভুত ঢুকাবেন না, ডায়রিয়াকে বাবুর কাছে ডাকবেন না।

লেখক: ডা. মোবাশ্বের আহমেদ নোমান
অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার, সার্জারি, 
রংপুর আর্মি মেডিকেল কলেজ।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

সিজারে বাচ্চা নেওয়ার অপর নাম নীরব মৃত্যু?


আমার এক বান্ধবী হলিক্রস মেডিকেল এর চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন। গত মাসে তার ফুটফুটে পুত্র সন্তান হয়। এর আগে একসময় আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম- সিজারে অনেক বাচ্চাই তো পৃথিবীতে নিয়ে আসলি অপারেশন করে, এখন তোর সিজার কোন চিকিৎসক করবে?

উত্তরে জানায়- নরমাল ডেলিভারি'র জন্য প্রিপারেসন নেওয়া হয়েছে ।
কারণ? সিজারে বাচ্চা হলে একজন নারী ২য়, ৩য় বার পুনরায় মা হতে গেলে ঝুঁকি থাকে ৯০.৭ % । অনেক সময়েই বাচ্চার শরীর ছুরি, কাচি লেগে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতি হয় যা আমাদের দেশের চিকিৎসকগণ কাউকেই বলেন না!

অর্থের লোভে প্রত্যেক গর্ভবতী মা কে মেডিকেল চেকাপ এর আগে থেকেই বলে রাখা হয় সিজারে বাচ্চা নিতে হবে অন্যথায়! মৃত্যু ঝুঁকির ভয় দেখানো হয়। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা WHO জানিয়েছে একটি দেশের ১৫% মেয়ে যদি একান্তই না পারে স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতে বাচ্চা নিতে, সেক্ষেত্রে সিজার করাতে হবে।

আমাদের দেশে বর্তমান সিজারে বাচ্চা হচ্ছে সে অনুপাতে ৯৭.৩% যা নারীস্বাস্থ্য'র জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই সিজারে বাচ্চা নিতে গেলে যেমন মা মারা যায় বেশীরভাগ সময়, তেমনি ক্ষতি হয় নব জন্ম নেওয়া শিশুটিরও।

সিজারে হওয়া বাচ্চা অনেক বেশী অসুস্থ থাকে একটু খেয়াল করে দেখবেন, যা নরমালে হওয়া বাচ্চাদের খুব একটা হয় না। প্রতি বছর সিজারে বাচ্চা হতে গিয়ে মারা যায় আমাদের দেশে ২৭.৯% মা, শিশু। এ ছাড়াও সিজার অপারেশনে রোগীর জন্য রক্ত চাওয়া হয় অনেক সময়ই ১০-১৫ ব্যাগ, যার মধ্যে বড়জোর ২ব্যাগ রক্ত কাজে লাগিয়ে অন্যগুলো বিক্রি করা হয়।

সামাজিক স্ট্যাটাস হয়ে গেছে এখন সিজারে বাচ্চা নেওয়া! যা বর্তমান নারীদেহ কে ধ্বংস করে দিচ্ছে নীরবে। চিকিৎসকরা সবই জানেন, বুঝেন কিন্তু হাঁসপাতালের মালিকদের খুশী রাখতে এবং নিজেদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে তারা করেন নারীর পেট কাঁটা বিজনেস ।

সুত্র: ঢাকা মেডিকেল কলেজ, পিজি হাঁসপাতালের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক।
তথ্য: Independent Tv (তালাশ)
বিশ্লেষণ: আরিফ রহমান।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness